শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কতৃজ্ঞতা রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ পরিবারের

নিজস্ব প্রতিবেদক : বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ’র পরিবারের ১১ সদস্য কানাডার উদ্দেশ্যে যাত্রার আগে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কানাডার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগের আগে মুহিবুল্লাহ’র মেয়ের জামাতা মোহাম্মদ নওখিম ও ছেলে হাসমত উল্লাহ সাথে একটি সংস্থা প্রতিনিধি আলাপকালে এমন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। যার ভিডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে।

জামাতা মোহাম্মদ নওখিম আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।

জামাতা মোহাম্মদ নওখিম বলেন, মৃত্যুর আগে মুহিবুল্লাহ রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য বার্মিজ কারিকুলামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যেখানে প্রায় ৮’শ রোহিঙ্গা শিশু পড়ালেখা করতেন। সম্প্রতি ওই স্কুলটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। রোহিঙ্গাদের মান উন্নয়নের জন্য ওই স্কুলটি পুনরায় চালু করার আহ্বানও জানান তিনি।

নওখিম বলেন, ক্যাম্পে জীবনের নিরাপত্তা না থাকায় ৬ মাস পর্যন্ত নিরাপত্তা বলয়ে ছিলেন। এর বাইরেও অনেক ঝুঁকি ছিল। এই মুহুর্তে কানাডায় যেতে পারায় বাংলাদেশ সরকার, কানাডা সরকার, ইউএনএইচসিআরসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কানাডা গেলেও মুহিবুল্লাহ’র স্বপ্ন ছিল রোহিঙ্গা জাতিকে স্ব-সম্মানে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো। ওই চেষ্টার পক্ষে কাজ চালিয়ে যাব।

মুহিবুল্লাহ’র বড় ছেলে হাসমত উল্লাহ বলেন, কানাডায় যেতে পারায় একদিকে আনন্দের আরেক দিকে বেদনাদায়ক। বেদনাদায়ক এই জন্য যে এখানে আমার পিতা মুহিবুল্লাহ খুন হয়েছে, একই সঙ্গে বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ক্যাম্পে রয়ে গেছে। আর আনন্দদায়ক এই জন্য যে, কানাডায় গিয়ে একটি নিরাপত্তামূলক নতুন জীবন পাওয়া যাবে।

জানা যায়, রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর পরিবারের ১১ সদস্য কানাডার উদ্দেশে বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাতে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে যাত্রা দেন। যেখানে মুহিবুল্লাহর স্ত্রী নাসিমা খাতুন, তার ৯ ছেলে-মেয়ে, মেয়ে জামাইসহ ১১ জন কানাডার উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।

এর আগে গত বছরের শেষের দিকে মুহিবুল্লাহর পরিবার ও আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের কিছু সদস্যসহ মোট ১১ পরিবারের সদস্য জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার ছাড়া অন্য দেশে বসতি স্থাপন করার আবেদন করে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়, জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার এবং যুক্তরাষ্ট্রে আবেদন করা হয়। আবেদনে তারা যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া বা কানাডা নাম উল্লেখ করেন। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও কানাডা সরকার, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় তারা বাংলাদেশ ছাড়েন।

এদিকে ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়া কুতুপাং শিবিরে নিজ কার্যালয়ে গুলিতে নিহত হন শীর্ষস্থানীয় রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ। হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর থেকে তার ছোটভাই হাবিব উল্লাহ, স্ত্রী নাসিমা খাতুনসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজনদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এরপর থেকে তাদের ক্যাম্প থেকে সরিয়ে উখিয়া ট্রানজিট পয়েন্টে কঠোর নিরাপত্তায় রাখা হয়।

তবে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) সামছু-দৌজা নয়ন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888